দুবেলা, ঋত্বিকা ঘোষ : সাত বছরের শিশুকে যৌন নির্যাতনের পর খুন। ঘটনাটি ঘটেছে বালিগঞ্জের তিলজলা এলাকায়। অভিযুক্তর নাম অলক কুমার। তিনি বিহারের বাসিন্দা।সন্তানহীন এই অলক কুমার সন্তান লাভের আশায় খুন করেন এই সাত বছরের প্রতিবেশী শিশুটিকে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী অভিযুক্তের দাবি,অলকের স্ত্রীর তিনবার গর্ভপাত হয়েছে।তাই অলক কে বিহারের একজন তান্ত্রিক নরবলির নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুনঃ সফল উপগ্রহ উৎক্ষেপণ ইসরোর
রবিবার সকালবেলা বাড়ির আবর্জনা ফেলতে বাড়ির নিচে যাই ওই শিশুটি। তারপর আর ঘরে ফেরেনি।সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় শিশুটি বাড়ির ভেতরে ঢুকে গেছে। তাও চিরুনি তল্লাশি করেও মেলেনি শিশুটির কোনো খোঁজ।সে সময় অলকের ফ্ল্যাটটি বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। পরে সন্ধ্যেবেলায় অলকের ঘরটি খোলা পেয়ে সেখানে তল্লাশি করলে সিলিন্ডারের পাশে বস্তার মধ্যে শিশুটির দেহ উদ্ধার করা হয়। সেই সময় ধরা হয় অভিযুক্তকে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের কাছে দাবি করে অভিযুক্তকে তাদের হাতে তুলে দিতে।
আরও পড়ুনঃ কোপের মুখে সঙ্গীতশিল্পী
অভিযুক্ত অলোক কুমারকে গ্রেফতার করার পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এই খুনের কথা স্বীকার করেন তিনি। অভিযুক্ত দাবি করেন, বারংবার চেষ্টা করো মা হতে পারছিলেন না তার স্ত্রী। বাধ্য হয়ে তারা বিহারে একটি তান্ত্রিকের পরামর্শ নেন। সেই তান্ত্রিক জানান যে নবরাত্রীর আগে নরবলি দিতে হবে তাকে। তাহলেই তাদের কোল আলো করে সন্তান আসবে। এরপরে রীতিমতো ওত পেতে ছিলেন অলোক।
আরও পড়ুনঃ ইতিহাস রচনা করল “দোস্তোজী”
রবিবার যখন ওই শিশুটি আবর্জনা ফেলতে ফ্লাটের নিচে নামে তারপর ঘরে ফেরার সময় শিশুটিকে জোর করে নিজের ঘরে টেনে নিয়ে যান দোতলার বাসিন্দা অলক। ঘরে নিয়ে যাওয়ার পর শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন চালান তিনি। হাত পা মুখ বেঁধে রাখেন। এবং স্ক্রু জাতীয় কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করে ওই শিশুটিকে। মাথার পাশাপাশি কানের কাছেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে
আরও পড়ুনঃ রবিবার থেকেই বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে
শিশুটির দেহ উদ্ধারের পরেই রীতিমত তাণ্ডব শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশের গাফিলতির জন্যই বাঁচাতে পারা যায়নি শিশুটিকে। তারা আরো বলেন, নিখোঁজ শিশুটিকে খুঁজে না পাওয়ায় সকাল ১২ টা নাগাদ অভিযোগ করা হয়। তখন সেরকম পাত্তা দেয়নি পুলিশ। যদি সেই সময় সঠিকভাবে তল্লাশি করা হতো তাহলে হয়তো জীবিত পাওয়া যেত ওই শিশুটিকে। এমনই দাবি করেপুলিশের বিরুদ্ধে খুব উগরে দিয়েছেন স্থানীয় জনতা। উন্মত্ত জনতা তিলজলা থানায় ইট বৃষ্টি চালান। অবরোধ করা হয় শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচল। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়পুলিশের গাড়ি বাইক। দমকলের ইঞ্জিন আগুন নেভাতে আসলে সেটিও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। নামানো হয় ৱ্যাফ।পরিস্থিতি সামাল দিতে কাদানে গ্যাসের সেল ও ফাটানো হয়। গ্রেফতার করা হয় এক মহিলা সহ আরো তিনজনকে।সমস্ত বিষয় নিয়ে রীতিমতো অশান্ত হয়ে উঠেছে তিলজলার পরিবেশ।
আরও পড়ুনঃ রাহুলের ইচ্ছাতেই প্রমোশন কানহাইয়ার
এ বিষয়ে সমাজমাধ্যমের পক্ষ থেকে পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পুলিশ আধিকারিক ডিসি এস ই ডি শুভঙ্কর ভট্টাচার্য জানান, ” সমস্ত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। ময়না তদন্তের রিপোর্ট না এলে শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন হয়েছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না।যারা যারা ভাঙচুর করেছে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।মৃতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও বহিরাগতরাও পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে।আমরা তাদের খোঁজ চালাচ্ছি।ভিডিও দেখে খোঁজ চালানোর পর ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার পরও কেন এমন ঘটনা ঘটলো সেই বিষয়টি খুঁটিয়ে দেখছে পুলিশ।”
আরও পড়ুনঃ আধারের সঙ্গে প্যানের সংযুক্তি সময় বাড়ানো হোক, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি অধীরের