শেহবাজ শরিফের ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির জরুরি সভা

Spread the love

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির (এনসিএ) একটি জরুরি সভা ডেকেছেন। এই সভা দেশের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি এবং কৌশলগত সম্পদ নিয়ন্ত্রণকারী সর্বোচ্চ সামরিক ও বেসামরিক সংস্থার সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ। তবে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ দাবি করেছেন যে এনসিএ-র সঙ্গে কোনও সভার পরিকল্পনা নেই।

ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটি কী?

২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটি (এনসিএ) ইসলামাবাদে অবস্থিত। এটি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা নীতি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এনসিএ-র প্রধান দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র নীতি নির্ধারণ, কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং মিসাইল কর্মসূচির তত্ত্বাবধান।

সাম্প্রতিক উত্তেজনার পটভূমি

পহেলগাঁও হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অধীনে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। ৮ মে লাহোরে পাকিস্তানের এইচকিউ-৯ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়। জবাবে, পাকিস্তান গত রাতে ফতেহ-১ মিসাইল নিক্ষেপ করে, যা ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম আকাশেই ধ্বংস করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে, পাকিস্তানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কৌশল নিয়ে আলোচনা এবং সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের পরিকল্পনার জন্য এনসিএ-র সভা ডাকা হতে পারে।

এনসিএ-র গঠন

এনসিএ-র সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। এর সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন রাজা নকভি, অর্থমন্ত্রী মহম্মদ ঔরঙ্গজেব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ, জয়েন্ট স্টাফ কমিটির প্রধান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা, সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ এবং বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ঐক্যমত্য বা ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এবং কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগ (এসপিডি) এর বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করে।

এনসিএ-র গুরুত্ব

এনসিএ পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র এবং কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন, ব্যবহার এবং নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী। এর মূল কাজগুলো হল:

  • পারমাণবিক নীতি: পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার ও স্থাপনার নীতি প্রণয়ন।

  • ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি: ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন ও স্থাপনার তত্ত্বাবধান।

  • কৌশলগত সিদ্ধান্ত: সংকট বা যুদ্ধের সময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

  • নিরাপত্তা: পরমাণু অস্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং অননুমোদিত ব্যবহার প্রতিরোধ।

বর্তমান পরিস্থিতি

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে। এনসিএ-র এই সভা পাকিস্তানের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দাবি সত্ত্বেও, সভার বিষয়ে বিভ্রান্তি অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

এই সংকটে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। উভয় দেশকে সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শান্তি ও কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Related posts

Leave a Comment