তিলোত্তমার শহর

Spread the love
সৌমিক চ্যাটার্জী, মুখ্য সম্পাদক, দুবেলা

দুবেলাঃ শহরের তে কথা ছিলো উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়ার। স্বাধীনতা উদযাপনে প্রস্তুত ছিলো রেস্তোঁরা থেকে শপিং মল। তেরঙ্গা পতাকার পসরাও সাজানো ছিলো চাহিদা বুঝে। স্বাধীনতার বিপনন তৈরি ছিলো বাজার জুড়। স্বাধীনতা দিবসের আগের রাত। তাল কাটল জনতা। গণসঙ্গীত গাইল শহর কলকাতা, অন্য সুরে , ন্যায় বিচার চেয়ে।

আসলে সে দিন শুধু মেয়েরা শুধু রাত দখল করতে নামেননি। অধিকার চাইতে নেমেছিলেন বঞ্চিত মানুষ। শোষিত নাগরিক আলো জ্বেলে পথ দেখাতে চেয়েছিলেন শাসক কে, সে দিন মাঝ রাতে। দূর থেকে এক তিলোত্তমা সেদিন দেখেছিলো, এ শহরের বুকে কত চোখ জেগে আছে তারা হয়ে। বিচার চেয়ে। সে রাত বলেছিলো সময় কে যন্ত্রনার ইতিহাস, অসাম্যের দস্তাবেজ হাতে। নিছক মৌনতা ছিলোনা কোন জমায়েতে। ছিলো না দলীয় রাজনীতি। ছিলো না লিঙ্গের রাজনীতি। ছিলোনা কাজের, শ্রেণীর রাজনীতি।

তবু সেই প্রতিবাদ ছিলো আগাগোড়া রাজনৈতিক। অত্যাচারের বিরুদ্ধে, ক্ষমতার কদর্য আস্ফালনের বিরুদ্ধে ছিলো লাখো মানুষের ব্যক্তিগত অবস্থান। দখল হয়ে যাওয়া ক্ষত বিক্ষত মৃত শরীরের আড়াল থেকে দেখেছিলেন তিলোত্তমা , অভ্যুত্থান। রাষ্ট্র যন্ত্রের বিরুদ্ধে। ক্ষমতার বিরুদ্ধে।

ঘটনার প্রেক্ষিত আর কারো অজানা নয়। এক তিলোত্তমা মিলিয়ে দিলেন , ঘুচিয়ে দিলেন বিভেদ আর বিদ্বেষ। জীবন দিয়ে, মরে গিয়ে। অসাড় দেহ থেকে , রক্তকরবীর নন্দীনির গলা ভেসে এল কলোরবে – “রাজা । মৃত্যুই আমার অস্ত্র”।

এ ঘটনা পৃথিবীর বুকে বড় কম ঘটে আজকাল। আমরা অনেকেই সে মধ্যরাতে ছিলাম না যেদিন স্বাধীন হয়েছিলো মাতৃভুমি। তাই হয়তো,এই ইতিহাসের দৃশ্যায়ন আমাদের জন্য বরাদ্দ ছিলো। আমরা সাক্ষী হলাম বিদ্রোহের প্রথম পদক্ষেপের ,যার অভিঘাত সুদূর প্রসারী। বদলের বারুদ ভরা আছে তাতে। আমরা সবাই এখনও শান্তিপূর্ণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। বিস্ফোরণের অপেক্ষায়।

 

Related posts

Leave a Comment