দুবেলা, অরিজিৎ মন্ডলঃ ত্রিপুরা বিধানসভা মোট ৬০টি আসন নিয়ে গঠিত। সকাল থেকেই যে ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছিল ত্রিপুরার ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই বিজেপি অনেকটাই এগিয়ে ছিল। বাম কংগ্রেস জোট প্রথম দিকে প্রায় ২৪ আসনে এগিয়ে থাকলেও পরবর্তীকালে তারা পেছাতে শুরু করে বামেরা ১২ আসন ও কংগ্রেস ৬ আসনের এগিয়ে থাকে। উল্টোদিকে ত্রিপুরা মাথায় প্রথমে ১৬ টি আসনে এগিয়ে থাকলেও পরে তাদের আসন কমতে কমতে ১১ টি আসনের এগিয়ে থাকে। বিজেপি তাদের ব্যবধান বাড়াতে থাকে তারা ম্যাজিক ফিগার পার করে প্রায় ৩২ আসনে এগিয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ নাগাল্যান্ডে সরকার গড়ার তোরজোর বিজেপি জোটের
বিজেপি-আইপিএফটি জোট
শেষ পর্যন্ত ৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভায় বিজেপি এইবার ৫৫ টি আসনের লড়ে ৩২ টি আসনে জয়লাভ করে তাদের সহযোগী আইপিএফটি ৬টি আসনে লড়ে মাত্র ১টি তে জয় পায়। বিজেপির ঝুড়িতে গিয়েছে প্রায় ৩৯ শতাংশ ভোট। আইপিএফটি ভোট শতাংশ ১.২। গতবারের বিধানসভা ভোটে তুলনায় প্রায় ১০% ভোট কমেছে বিজেপির।
আরও পড়ুনঃ প্রয়াত পাণ্ডব গোয়েন্দা স্রষ্ঠা
বাম-কংগ্রেস জোট
এইবারে নির্বাচনে বামফ্রন্টের ভোট কমেছে আরো। বাম কংগ্রেস জোট করে এই বছর ভোটে লড়ে তারা। কংগ্রেসের ভাগে যায় ১৩ টি আসন যার মধ্যে তারা ৩টি আসনে জয়লাভ করে। বামফ্রন্ট লড়াই করে ৪৬ টি আসনে তার মধ্যে তারা পায় ১১টি আসন। ১টি আসনে স্বাধীন প্রার্থীকে সমর্থন করে তারা। বামফ্রন্টের মোট প্রাপ্ত ভোট শতাংশ ২৬.৮। কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট শতাংশ ৮.৫৬।
আরও পড়ুনঃ ‘জেতার সম্ভবনা কম’ : দিলীপ ঘোষ
তিপ্রা মথা
প্রায় ৪৪ টি জনজাতি আদিবাসী অধ্যুষিত বিধানসভা অঞ্চলে প্রার্থী দেয় তিপ্রা মথা। তার মধ্যে ১৩ টি আসনে জয়লাভ করে তারা। তাদের প্রাপ্ত ভোট শতাংশ প্রায় 20।
তৃণমূল
তৃণমূল এইবারেও খাতা খুলতে পারেনি, তারা লড়াই করেছে নোটার সাথে। তৃণমূল পেয়েছে মাত্র ০.৮৮ শতাংশ ভোট।
আরও পড়ুনঃ সাগরদীঘিতে জোড় ধাক্কা তৃণমূলের
২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে ত্রিপুরা ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৫১টি তে লড়ে ৩৬টিতে জয় পেয়েছিল বিজেপি। ভোট শতাংশের হারে প্রায় ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তারা। তাদের সহযোগী জনজাতি দল আইপিএফটি ৯টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ৮টি তেই জয়লাভ করেছিল। সেবার মাত্র ১৬ টি বিধানসভা আসনে জয় পেয়েছিল বামেরা। কংগ্রেস একটি আসন পাইনি।
আরও পড়ুনঃ জীবন ফিরে পেলেন সুস্মিতা সেন!
বাম কংগ্রেস জোট হয় বাঙালি উদ্দেশ্যে ৪০ টি আসনে চাপে ছিল বিজেপি কিন্তু ফল বেরোনোর পর বাঙালি ভোটারদের সৌজন্যেই ক্ষমতায় ফিরছে বিজেপি। বাম বিজেপির অভিযোগ তিপ্রা মথা বিরোধী ভোট ভাগ করেছে যার ফলে বিজেপি সুবিধা হয়েছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরও বিজেপি জানিয়েছে, মথার সমস্ত দাবি তারা মেনে নিতে পারে শুধুমাত্র গ্রেটার ত্রিপুরা ল্যান্ড দাবি ছাড়া। তাই যদি মথার প্রধান প্রদ্যুৎ দেবশর্মা বিজেপির সাথে জোটে আসতে চায় তাহলে বিজেপির তরফ থেকে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই বারের নির্বাচনে মূলত ছিল ত্রিমুখী। এই ত্রিমুখী লড়াইয়ে কোন রকমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে পদ্ম জোট। প্রায় ২০টি আসনে জয়ের ব্যবধান ৫০০ ভোটেরও কম। বিজেপি-আইপিএফটি জোটের সরকার তৈরি করে এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা কিন্তু তিপ্রা মথা কি বিজেপির সরকারে যোগ দেবে নাকি বাম কংগ্রেস তিপ্রা মথাকে সাথে নিয়ে নতুন কোন সমীকরণের দিকে এভাবে সেটাই এখন দেখা। ত্রিপুরা রাজ্যে সরকার কে গঠন করে তার দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।
আরও পড়ুনঃ ৪০ দিন পর জামিনে মুক্ত নওশাদ