দুবেলা, সৃষ্টি চক্রবর্ত্তী : বিকল্পের কথা শুধু বলা করে দেখাতে সক্ষম হলো বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। বাম ছাত্র আন্দোলনের বহু ইতিহাস রয়েছে গোটা দেশ সহ এই রাজ্যে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ছাত্র আন্দোলনের বিষয় এবং ধরন দুইয়েরই পরিবর্তন ঘটেছে। সিপিএমের ছাত্র সংগঠন সব বিদ্যালয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য স্বাস্থ্যকর শৌচাগার থেকে শুরু করে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন তৈরির দাবিতে মাঠে নেমেছে বহুবার। এসএফআই কলকাতা জেলা তাদের দপ্তরে স্যানেটারি ভেন্ডিং মেশিন বসিয়ে সেই দাবির বাস্তবায়ন করলো। এই সামাজিক ছুঁৎমার্গগুলোকেই ভাঙতে চাইছে তাঁরা।
আরও পড়ুন : ঘূর্ণিঝড় রেমালের জেরে বাতিল একাধিক ট্রেন
মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন ডে উপলক্ষে দীনেশ মজুমদার ভবনে এসএফআইয়ের কলকাতা জেলার উদ্যোগে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন উদ্বোধন করা হলো। উদ্বোধন করলেন দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম, ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সোনামনি টুডু যিনি প্যাডওম্যান নামে বিখ্যাত। এবং উপস্থিত ছিলেন এসএফআই কেন্দ্রীয় কমিটির নেত্রী ঐশী ঘোষ সহ রাজ্য নেতৃত্ব। এসএফআইয়ের কলকাতা সম্পাদক দিধীতি রায় বলেন, “কুসংস্কারের বশে এসে পিরিয়ড চলাকালীণ স্বাস্থ্য উপর নজর দেয় না বেশিরভাগ মহিলারা। পরবর্তীকালে মেয়েদের মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন নিয়ে সচেতন করার জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। কলকাতা সমস্ত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যানেটারি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয় এবং তাতে নিয়মিতভাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন রিফিল করা হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন শৌচাগারে এবং পাবলিক প্লেসেও স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন লাগানোর জন্য অনেকেই লড়াই করছেন এবং এই লড়াই চলবে।” সকল ছাত্রী এবং মেয়েদের রোগ মুক্ত ও স্বাস্থ্যকর ঋতুস্রাব উপহার দাওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন : রাজকোটে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড, শিশু সহ মৃত ২৪
গতকাল ২৮ শে মে ছিল বিশ্ব মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন ডে। সারা বিশ্বে মেয়েদের মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন সম্বন্ধে সচেতন করার জন্য পালন করা হয় এই দিনটি। ২০২৪ এর থিম হল “Together for #PeriodFriendlyWorld” অর্থাৎ আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে এক পিরিয়ড ফ্রেন্ডলি দুনিয়া তৈরি করার অঙ্গীকারবদ্ধ হতে চাই। ঋতুস্রাবের সময় পরিচ্ছন্ন স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে না পেরে বহু মেয়ে বিভিন্ন রকম রোগের সম্মুখীন হয়। সেই সব রোগ থেকে সুরক্ষার জন্য বহুবার বহু ক্যাম্পেইন করা হয়েছে। কিন্তু এই সচেতনতার অভাবে প্রতিবছর ৫ জনের মধ্যে ১ জন ছাত্রী স্কুলছুট হয়। প্রতিবছর গড়ে ২৩ মিলিয়ন ছাত্রী স্কুলছুট হয় সারা বিশ্বে। সচেতনতার অভাবে সারভাইকাল ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে যার মধ্যে ২৭% সারভাইকাল ক্যান্সার পেশেন্ট ভারতীয়। মানুষের মধ্যে এই সচেতনতা বিস্তারের জন্য লড়াই করতে হয় প্রতিনিয়ত। কলকাতার বিভিন্ন বিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় এর আগে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন বসানোর অঙ্গীকার নিয়েছিল। কিন্তু সফলভাবে এই কাজ সবাই করতে পারেনি। এমনকি অনেক কলেজে ভেন্ডিং মেশিন থাকলেও তাতে স্যানিটারি ন্যাপকিন থাকেনা। অনেক সময়ই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বিপদে পড়তে হয় বহু ছাত্রীকে। এর আগে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন লাগানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছিল।
আরও পড়ুন : দিল্লির শিশু হাসপাতলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, মৃত ৭ সদ্যজাত