দুবেলা, রিয়া বিশ্বাস: ২৭ জুন অর্থাৎ শুক্রবার, ভক্তি ও আধ্যাত্মিকতার আবহে পুরীর পবিত্র ভূমিতে শুরু হলো শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের বার্ষিক রথযাত্রা। প্রাচীন রীতিনীতি অনুসারে সকালে ‘পাহাঁদী’ উৎসবের মধ্য দিয়ে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা দেবী তাদের নিজ নিজ রথে আসীন হন। এরপর রাজা গজপতি দিবারঞ্জন দেব ‘ছেরাপহড়া’ অর্থাৎ রথ পরিষ্কার করে তিন দেবতাকে রথে আরোহনের জন্য প্রস্তুত করেন।
তিনটি রথ—বলভদ্রের ‘তালধ্বজ’, সুভদ্রার ‘দর্পদলন’ ও জগন্নাথের ‘নন্দীঘোষ’—অগণিত ভক্তদের টানতে টানতে এগিয়ে চলে গুণ্ডিচা মন্দিরের দিকে। সারা পৃথিবী থেকে আগত ভক্তদের ঢল নামে পুরীতে। প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১২ লক্ষের বেশি ভক্ত আজকের রথযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। তীব্র গরম ও ভিড়ের চাপে আজ রথ টানতে গিয়ে প্রায় ৬০০ জন ভক্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য মোতায়েন ছিল প্রায় ১০ হাজার নিরাপত্তাকর্মী ও বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক দল।
এই দিনটি শুধু এক ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং মানবিকতা, সহমর্মিতা ও আত্মিক উন্মীলনের এক বিশাল উদাহরণ হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যায় বিশেষ আলোকসজ্জা ও ধর্মীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে পুরী শহর হয়ে ওঠে এক আধ্যাত্মিক তীর্থভূমি।
বিশ্বাস করা হয়, এই দিনে রথ টেনে দেবতাদের গুণ্ডিচা যাত্রায় অংশ নেওয়া মানেই জীবনের পাপ মুক্তির এক দুর্লভ সুযোগ। সেই বিশ্বাসকে নিয়েই এবারও কোটি ভক্তের হৃদয়ে অনুরণিত হল পুরীর জগন্নাথ রথযাত্রা।

প্রতিমুহূর্তের খবর পেতে লাইক করুণ II দুবেলা নিউজ