দুবেলা, রিয়া বিশ্বাস: দীর্ঘদিনের মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে বিপর্যয়ের কবলে পাঞ্জাব হরিয়ানা জম্মু-কাশ্মীর সহ আরও বিভিন্ন এলাকা। বন্যায় ডুবে গেছে ঘরবাড়ি, কৃষি জমি থেকে শুরু করে সড়ক পথ। এমনকি টানা ২৪ ঘন্টায় ২৫০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বন্যায়। পাঞ্জাব সরকার জানিয়েছেন চার দশকের মধ্যে এমন বিপর্যয় দেখেননি মানুষ। ২৩ টি জেলায় বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেরে হয়েছে ৩৭।
ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত পাঞ্জাবকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার এক বিশেষ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি ঘোষণা করেন, ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের পুনর্গঠন, ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে কেন্দ্র সরকার ১৬০০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে। এই সিদ্ধান্তে স্বস্তির হাওয়া বইছে পাঞ্জাববাসীর মনে।
গত এক মাস ধরে টানা প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি অঞ্চলের অতিবৃষ্টির ফলে পাঞ্জাবের বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শতাধিক গ্রামের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক ও রেললাইন। নষ্ট হয়ে গিয়েছে হাজার হাজার একর চাষের জমি। নদীর বাঁধ ভেঙে গৃহহীন হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সরকারি হিসেব অনুযায়ী প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ বন্যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো কেন্দ্র সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।
তিনি বলেন, “পাঞ্জাবের মানুষ শুধু দেশের গর্ব নন, তাঁরা আমাদের খাদ্য উৎপাদনের মূল স্তম্ভ। আজ তাঁদের বিপদের দিনে আমরা নির্লিপ্ত থাকতে পারি না।” প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণামতে, এই ১৬০০ কোটি টাকা মূলত তিন ভাগে ব্যয় করা হবে—ত্রাণ ও জরুরি সহায়তা, অবকাঠামো পুনর্গঠন এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক অনুদান হিসেবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ)-এর একাধিক দল রাজ্যে উদ্ধারকাজে নেমেছে। সেনা ও আধা-সেনা বাহিনীও বন্যাবিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিলের অতিরিক্ত অর্থও প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্যশস্য, ওষুধ এবং গৃহহীনদের অস্থায়ী আশ্রয় নিশ্চিত করা হবে।
তবু আপাতত রাজ্যের সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রীর এই সাহায্য ঘোষণাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখছেন। গৃহহারা পরিবারগুলির বক্তব্য, সরকার যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে তবে তাঁরা আবারও নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবেন। পাঞ্জাবের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি ও লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনযাত্রা এই আর্থিক সহায়তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে। বন্যার দুঃসময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই ঘোষণা তাই রাজ্যের পুনর্গঠনে আশার আলো জ্বালালো।

প্রতিমুহূর্তের খবর পেতে লাইক করুণ II দুবেলা নিউজ