অগ্নিগর্ভে নেপাল: আগামী প্রধানমন্ত্রী কে, আন্দোলনকারীদের ভরসা কার ওপর?

Spread the love

দুবেলা, রিয়া বিশ্বাস: নেপালের শাসনভার এবার সেনার হাতে। আর কতদিনই বা চালাবে সেনারা পুরো দেশকে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করেছেন। অন্যান্য মন্ত্রীদেরও প্রায় পদত্যাগ করার কথা বলা হয়ে গেছে। গণ-অভ্যুত্থান, সংকট আর প্রত্যাশা সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর প্রথমদিকে নেপালে পরিস্থিতি একেবারে অগ্নিগর্ভে পরিণত হয়েছে। সরকারী ঘোষিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে জেন জেড (Gen Z) আন্দোলনের তরুণেরা রাস্তায় নেমে আসে। পুলিশের লাঠিচার্জ ও গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত, শতাধিক আহত। প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা কর্তব্যত্যাগ করেন। তার সরকারের পতন দেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত চমকে দিয়েছে। গত ১৭ বছরে ১৪ বার প্রধানমন্ত্রী বদলি হয়েছে নেপালে। এবার দেখার পালা পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর আসনে কে বসতে চলেছেন। এবং এই গুরুদায়িত্ব পালন করার মতন আছেনই বা কে কে?

প্রথমেই যার নাম উঠে আসছে তিনি হলেন সুদান গুরুং। ইনি একজন সমাজ সেবক বলা যায়। ২০১৫ সালে তার একটি সন্তান মারা যায় ভূমিকম্পের কবলে পড়ে। তারপর থেকেই তীব্রজেদ এবং মানসিক চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যায় তার। তিনি সর্বদা নেপালের উন্নয়নের কাজে এগিয়ে আসেন । প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে শিশুদের লেখাপড়ার সব ব্যবস্থা করেন। সমাজকে এগিয়ে নেওয়াই তার একমাত্র লক্ষ্য হয়ে ওঠে। এমনকি সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবেও তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় । যুব সমাজের কাছেও তিনি অন্যতম একজন হয়ে ওঠেন। তার কাজ এবং তার সংস্থা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি চর্চিত বিষয় হয়ে ওঠে।

দ্বিতীয়ত যার নাম বালেন্দ্র শাহ,বাদুড়ের ফাঁদে তরুণতার চিত্র ৩৫ বছর বয়সী কাঠমাণ্ডুর মেয়র, পুরানো রেপার্ বালেন্দ্র শাহ, বা ‘Balen’, এই আন্দোলনের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তার করুণা ও আন্তরিক উদ্দীপনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে জনতার পক্ষে দাঁড় করিয়েছে। এমনকি অনেকে তাঁর নামের পেছনে “পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী” হিসেবে উল্লেখ করছে।

আর তৃতীয় তিনি হলেন সব থেকে চর্চিত নামের মধ্যে অন্যতম একজন রবি লমিছনে। তিনি একজন জনপ্রিয় টিভি এংকার। টানা 60 ঘন্টা এংকারিং করে রেকর্ড করেছেন এই রবি লমিছানে।তারপর তিনি রাজনীতিতে আসেন এবং একটি দল খোলেন রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টি। এতটাই জনপ্রিয় হয়ে যায় যে তিনি ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার নেপাল হয়ে যায়। এরপর রবি লমিছামে কে শাসক দল ভয় পায় এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে থাকে। তাকে জেলে আটক করে রাখা হয়। নেপোলিয়নবাসি তাকে এতটাই চায় যে, জেল ভাঙ্গা হয়েছে রবি লমিছামে কে বের করার জন্য।

নেপালে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি আগুন লাগানো হয়েছে,সুপ্রিম কোর্টে আগুন লাগানো হয়েছে,পার্লামেন্টে আগুন লাগানো হয়েছে,রাষ্ট্রপতির বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। ভয়াবহ অগ্নিগর্ভের মধ্যে নেপালের বর্তমান অবস্থা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা দায়িত্ব থেকে সরে গেছেন ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫। বর্তমান পরিস্থিতি সেনাবাহিনী প্রাধান্যে। রাজনৈতিক শূন্যস্থান, তরুণ নেতৃত্বকেন্দ্রিক নিরপেক্ষ ব্যবস্থা দাবি তাঁরাই করছে। নেপালে রাজনৈতিক খাদায় উত্তাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তরুণদের অসন্তোষ সঞ্চারিত হয় তারা দুর্নীতি, সামাজিক বৈষম্য, ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে রাজপথে এসেছে। তাঁদের দাবি একটাই নতুন নেতৃত্ব, নতুন আশা, নতুন সংস্কার।

Related posts

Leave a Comment