ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ!

Spread the love

 দুবেলা, হিন্দোল সেন চট্টোপাধ্যায়ঃ ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শ্রীনগরের বিভিন্ন এলাকায় জোরাল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, যা অঞ্চলজুড়ে আতঙ্কএর সৃষ্টি করে। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “এই যুদ্ধবিরতির কী হল? শ্রীনগরের চারপাশে বিস্ফোরণের শব্দ!”—এটি পরিস্থিতির উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে।

এই যুদ্ধবিরতি সন্ধ্যা ৫টা থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, যা ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক অপারেশনের প্রধানদের মধ্যে ফোন এর মাধ্যমে ঠিক হয়। এতে স্থল, জল এবং আকাশপথে সকল ধরনের সামরিক কার্যকলাপ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২ মে পাহেলগামে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জবাবে ভারত “অপারেশন সিন্দুর” চালু করে, যার মাধ্যমে পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে আক্রমণ চালানো হয়। এরপর দুই দেশের মধ্যে গোলাগুলি ও ড্রোন হানার মাধ্যমে সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়। এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় সম্ভব হয় এবং ৩০টির বেশি দেশের সমর্থন পায়।

ওমর আবদুল্লাহ এই ঘোষণা স্বাগত জানিয়ে বলেন, “যদি এটা ২-৩ দিন আগে কার্যকর হতো, অনেক প্রাণ হয়তো রক্ষা পেত।” পাশাপাশি তিনি রাজ্য প্রশাসনকে দ্রুত ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শ্রীনগরে বিস্ফোরণের ঘটনা এই উদ্যোগের স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো তাত্ক্ষণিক বিবৃতি না আসায় জনগণের মধ্যে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানান, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নীতি কঠোর এবং কোনোভাবেই আপসযোগ্য নয়। অন্যদিকে, পাকিস্তান দাবি করে যে তারা যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানায়।

দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীর অঞ্চল ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের কেন্দ্রস্থল। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ও পারস্পরিক অবিশ্বাসের পটভূমিতে, নতুন করে হওয়া এই সমঝোতার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত থেকে যাচ্ছে। বিশ্ব সম্প্রদায় দুই পক্ষকেই শান্তি বজায় রাখতে এবং আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানাচ্ছে।

Related posts

Leave a Comment