নেহা ব্যানার্জী, দুবেলা: সীমান্তে ফের উত্তেজনা। যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাঝেও পাকিস্তান একাধিকবার তা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে ভারত। ড্রোন হামলা ও গোলাবর্ষণের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পাল্টা জবাবে প্রস্তুত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে চলছে নজরদারি।
শনিবার রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রি জানান, পাকিস্তানি সেনা বাহিনী একাধিকবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙেছে। তাঁর দাবি, “এই অনুপ্রবেশ ঘোরতর নিন্দনীয়। পাকিস্তানকে এর দায় নিতে হবে এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।” সীমান্তে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণ ও ড্রোন অনুপ্রবেশের পর ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও সক্রিয় হয়ে ওঠে। জম্মু ও কাশ্মীর, গুজরাটের কচ্ছ, পাঞ্জাব ও রাজস্থানে একাধিক ড্রোন ঢুকে পড়ে। ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বেশ কয়েকটি ড্রোন নষ্ট করেছে। বেশ কিছু অঞ্চলে জরুরি সতর্কতা জারি করে ব্ল্যাকআউট চালু করা হয়েছে, সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা চুক্তির “নিষ্ঠাবান বাস্তবায়নের” পক্ষে এবং পরিস্থিতি “দায়িত্বশীল ও সংযমের সঙ্গে” সামাল দিচ্ছে। বরং ভারতকেই উল্টো দোষারোপ করেছে তারা। এমন উত্তেজনার মাঝে মধ্যস্থতা করেছে আমেরিকা। শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, উভয় দেশের মধ্যে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা আমেরিকার মধ্যস্থতায় সম্পন্ন হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
চুক্তি অনুযায়ী, উভয় দেশ স্থল, আকাশ ও জলপথে সামরিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে। তবে ভারত জানিয়ে দিয়েছে, ইন্দাস নদী জলচুক্তি আপাতত স্থগিত থাকবে এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভারত সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত। এয়ার কমোডর রঘু নায়ার বলেন, “যদিও যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হয়েছে, তবু আমরা সীমান্তে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।”
এরই মাঝে শনিবার সকালে ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের আটটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। রাডার সিস্টেম এবং গোলাবারুদের ডিপো লক্ষ্য করে আঘাত হানা হয়। রাজৌরি জেলায় পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে প্রাণ হারান অতিরিক্ত জেলা উন্নয়ন কমিশনার রাজ কুমার থাপা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ঘটনাস্থল ও থাপার বাসভবনে যান।