দুবেলা, অরিজিৎ মন্ডলঃ ২০১৮ সালের শেষ কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জোট করে সরকার গঠন করেছিলো এবং প্রধান বিরোধী দল হিসেবে কর্ণাটক বিধানসভায় গিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু এই নির্বাচনে শেষ হাসি হাসলো কংগ্রেসই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ বিজেপির তাবর-তাবর নেতারা জান লড়িয়ে দিয়েছিল কর্নাটকে ধরে রাখার জন্য। কিন্তু কর্নাটকের মানুষেরা হাতেই ভরসা রাখলেন।
২২৪ আসনের কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের গণনার দিন সকাল থেকেই যে ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছিল প্রথম থেকেই অনেকটাই এগিয়ে ছিল কংগ্রেস। বেলা বাড়ার সাথে সাথেই পঞ্চম ও ষষ্ঠ রাউন্ডে গিয়ে বিজেপি অনেকগুলি সিটে এগিয়ে যায়। কিন্তু দিনের শেষে ফলাফল পুরো ১৮০ ডিগ্রি বদলে যায়। জেডিএস নেতৃত্ব যেমনটা বলছিল যে তারাই হবে কিং মেকার তেমনটা দেখা গেল না রেজাল্টের দিন। মাত্র ১৯ টা আসন নিয়ে তাদেরকে সন্তুষ্ট থাকতে হলো। দিনের শেষে কংগ্রেস পেল ১৩৭ টি আসন যা ম্যাজিক ফিগার এর থেকেও ২৪ টি আসন বেশি। দিন শেষে বিজেপির ঝুলিতে মাত্র ৬৫ আসন ও অন্যান্যরা পেয়েছে ৩টি আসন। এই নিয়ে শেষ ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেস রাজ্য দখল করল। কর্নাটকে কংগ্রেসের পেয়েছে ৪২.৯ শতাংশ ভোট, বিজেপি পেয়েছে ৩৬ শতাংশ এবং জেডিএস পেয়েছে ১৩.২৯ শতাংশ ভোট।
দক্ষিণের এই রাজ্য দখলের পর কংগ্রেস শিবিরে অনেকটাই স্বস্থির নিঃশ্বাস। প্রথমত, দক্ষিণ ভারত থেকে পুরোপুরি ভাবে মুছে ফেলা গিয়েছে বিজেপিকে। দ্বিতীয়ত, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ভারত জনযাত্রা যে প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলেছে ভারতীয় রাজনীতিতে তার একটা স্পষ্ট নিদর্শন কর্ণাটক বিধানসভা। সামনেই লোকসভা নির্বাচন তার আগে বাড়তি অক্সিজেন পেল জাতীয় কংগ্রেস এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তারা আরও বলছেন কর্নাটকে একের পর এক ইস্যুতে বিদ্ধ হয়েছিল বিজেপি পরিচালিত সরকার। ‘হিজাব’ থেকে শুরু করে ‘চল্লিশ শতাংশের সরকার’ এই ইস্যুতে অনেকটাই এক ঘরে ছিল বিজেপি। মধ্যিখান থেকে এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস মাঠে নেবে কর্নাটকের মানুষের মন জয় করে তারা কর্নাটকে সরকার গড়তে চলেছে।
কর্নাটকের এই জয় কংগ্রেসকে কি বাড়তি অক্সিজেন দিল? নাকি ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে দুধ হাত পিছিয়ে এসে চার ধাপ এগোতে পারবে কি বিজেপি? সেটাই এখন দেখার।
হাতের হাতে কর্ণাটক, বিপর্যস্ত পদ্ম
