দুবেলা, রিয়া বিশ্বাস: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার হুগলি জেলার ফুরফুরা শরিফে আয়োজিত ইফতার মজলিসে অংশগ্রহণ করেন। প্রায় এক দশক পর তাঁর এই সফরকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনগণ ও ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ইফতারের আগে মুখ্যমন্ত্রী ফুরফুরা শরিফের পীর ও পীরজাদাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁদের বিভিন্ন প্রশ্ন ও উদ্বেগ শোনেন। তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু সরকারি প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দেন।
আরও পড়ুন: শিয়ালদহ কি আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহকারীদের সেফ প্যাসেজ ?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমি আল্লাহতালার কাছে দোয়া করব রমজান মাসে তিনি যেন সবার রোজা কবুল করেন। আমি সবার জন্য দোয়া করব সবাই যেন শান্তিতে থাকেন। সম্প্রতি, শান্তি, ঐক্য- সবাইকে ভালো রাখার জন্য এটাই আমার বার্তা।” ফুরফুরা শরিফে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল বিজেপি সমালোচনা করেছে। বিজেপি বিধায়ক ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেন যে, মুখ্যমন্ত্রী ভোট ব্যাংক গোছাতেই ফুরফুরা যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “উনি প্রতিবার বিধানসভা ভোটের আগে ফুরফুরায় যান। ২০১৬ সালেও। গিয়েছিলেন। এখনই ভোট এসেছে, তাই ফের তাকে ফুরফুরায় যেতে হবে।”
আরও পড়ুন: হোলি কা দহন: অহং ঢাকে রঙে
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে এই সমালোচনার জবাব দেন। তিনি বলেন, “আমি দুর্গাপুজো-কালীপুজো করলে প্রশ্ন ওঠে না তো! তা হলে এখন প্রশ্ন উঠছে কেন? আমি সব ধর্মের সব অনুষ্ঠানে যাই। আমি ক্রিসমাসে যাই, গুরুদ্বারে যাই, রমজ়ানে যাই, ইফতারেও যাই। বাংলার মাটি সম্প্রীতির মাটি।” ফুরফুরা শরিফে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা চলছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুসলিম ভোটারদের আকৃষ্ট করার একটি কৌশল। তবে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন যে, তিনি সব ধর্মের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এবং এটি সম্প্রীতির বার্তা বহন করে। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর ফুরফুরা শরিফের স্থানীয় জনগণ ও ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, সরকারের প্রতিশ্রুত উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি দ্রুত বাস্তবায়িত হবে এবং স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।সফর শেষে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় ফিরে যান এবং পরবর্তী কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেন।
