অমর্ত্য সেনকে জমি খালি করার নোটিশ বিশ্বভারতীর

Spread the love

দুবেলাঃ এবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জমি খালি করার নোটিশ দিল নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকে। ১৫ দিন অর্থাৎ ৬ মে-র মধ্যে জমি ছেড়ে দেওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছে বিশ্বভারতী। নয়তো তাঁকে বল প্রয়োগ করে উচ্ছেদ করতে বাধ্য হবে বিশ্বভারতী। এমনই বিস্ফোরক নোটিশ জারি হয়েছে বিশ্বভারতীর সম্পত্তি বিভাগের পক্ষ থেকে ৷ এই মুহূর্তে অধ্যাপক অমর্ত্য সেন বিদেশে ৷ তাঁর অনুপস্থিতিতে শান্তিনিকেতনে প্রতীচী বাড়ি বেদখল হয়ে যেতে পারে এই সংক্রান্ত একটি মামলা চলছে বোলপুরে এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে৷ মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত প্রতীচী বাড়ির চত্বরে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে শান্তিনিকেতন থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ৷

অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রেখেছেন। এই অভিযোগে ২৪ জানুয়ারি জমি ফেরত চেয়ে অধ্যাপক সেনকে প্রথম চিঠি দিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পরে আরও ২ টি চিঠি দেওয়া হয়েছিল৷ বিশ্বভারতীর দাবি মতো ইজারা নেওয়ার জমির পরিমাণ ১.২৫ একর ৷ কিন্তু অমর্ত্য সেনের দাবি অনুযায়ী, জমির পরিমাণ ১.৩৮ একর ৷ অর্থাৎ, ১৩ ডেসিমেল জমি নিয়ে বিবাদ দীর্ঘ দিন ধরে চলছে।

বিশ্বভারতীর অভিযোগ ছিল, ১৯৪৩ সালে অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেন বিশ্বভারতীর কাছ থেকে জমি ইজারা নিয়েছিলেন ৷ পরবর্তীতে তাঁর প্রয়াণের কিছুকাল পর আবেদনের ভিত্তিতে এই জমি ইজারা নেন অমর্ত্য সেন ৷ এই বিতর্কে প্রথম থেকেই অমর্ত্য সেনের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকার। জমি নিয়ে বিবাদ শুরুর কিছুদিন পর শান্তিনিরকেতনে গিয়ে অর্থনীতিবিদের সঙ্গে দেখা করে জমি সংক্রান্ত কিছু নথি তাঁর হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । পরে তাঁর নির্দেশেই অমর্ত্য সেনকে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হয় এবং উইলের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ জমি রেকর্ড করে দেওয়া হয় ৷

প্রয়াত আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী, উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পূর্ণ জমি বোলপুর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর অমর্ত্য সেনের নামে রেকর্ড করে দেওয়া হয় ৷ এর আগে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে একাধিকার বেনজির আক্রমণ করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ তারপর ভারতরত্নের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷গত সপ্তাহে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অমর্ত্য সেনের প্রতীচী বাড়ির দেওয়ালে উচ্ছেদের হুঁশিয়ারি দিয়ে একটি নোটিশ লাগিয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে, ১৯ এপ্রিল দখল করা জমি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷ এর প্রেক্ষিতে ১৭ এপ্রিল বিদেশ থেকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন অমর্ত্য সেন ৷ তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ইজারার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ জমির দাবি করতে পারে না ৷ এমনকী, স্থানীয় এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের সিদ্ধান্তও উল্লেখ করা হয়েছিল চিঠিতে ৷

এককথায়, ভারতরত্ন অমর্ত্য সেনকে ১৫ দিনের মধ্যে উচ্ছেদের চূড়ান্ত নোটিশ দিল বিশ্বভারতীর যুগ্ম কর্মসচিব ও সম্পত্তি আধিকারিক, যা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।

Related posts

Leave a Comment