পথ কুকুর ও গবাদি পশু নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নয়া রায়

Spread the love

দুবেলা, রিয়া বিশ্বাস: বহুদিন ধরে পথকুকুর নিয়ে সমস্যার কথা উঠে আসছে। কেউ কুকুর পথে রাখতে চাইছে না, আবার অনেকেই সেই পথকুকুরদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে।দেশজুড়ে পথকুকুর ও রাস্তার গবাদি পশু সংক্রান্ত বিতর্কে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশনের আশেপাশে থাকা সমস্ত রাস্তার কুকুর দ্রুত সরাতে হবে। আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চ—বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা এবং এন.ভি. আঞ্জারিয়া—স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, একবার ধরা পড়া কুকুরের বন্ধ্যাকরণ (Sterilization) শেষে তাদের আগের জায়গায় ফেরানো যাবে না।

এই নির্দেশের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে চলা পথকুকুর সমস্যা নিয়ে আইনি বিতর্কে এক নতুন দিক উন্মোচিত হল। আদালতের মতে, জননিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয়। তবে এই রায় শুধুমাত্র কুকুরদের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। সুপ্রিম কোর্ট দেশের সব রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ (NHAI) এবং পৌর সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় ও রাজ্য মহাসড়কসহ অন্যান্য রাস্তায় যাতে কোনো গবাদি পশু (গরু, ছাগল, মহিষ ইত্যাদি) ঘোরাফেরা না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এর পাশাপাশি আদালত আরও জানিয়েছে, প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে একটি নিবেদিতপ্রাণ ‘হাইওয়ে টহলদারি দল’ (Highway Patrol Team) গঠন করতে হবে। এই দলগুলির কাজ হবে রাস্তায় বা মহাসড়কে ঘুরে বেড়ানো গবাদি পশুদের ধরে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া, যেখানে তাদের যথাযথ খাদ্য, চিকিৎসা ও যত্নের ব্যবস্থা থাকবে।
সুপ্রিম কোর্টের মতে, শহর ও গ্রামীণ অঞ্চলে পশুদের নিয়ন্ত্রণহীন ঘোরাঘুরি শুধুমাত্র দুর্ঘটনার কারণ নয়, বরং তা জনস্বাস্থ্যের ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তাই আদালত পরিষ্কার ভাষায় বলেছে, রাজ্য সরকারগুলিকে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং পরবর্তী শুনানিতে অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

তবে পশুপ্রেমীদের একাংশ ইতিমধ্যেই এই রায়ের বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন—তাঁদের মতে, রাস্তায় থাকা কুকুর ও গবাদি পশুদের সরানো হলেও, তাদের পুনর্বাসনের সঠিক পরিকল্পনা না থাকলে প্রাণীদের দুর্ভোগ বাড়তে পারে।
তবে আদালতের মতে, মানবিকতার সঙ্গে আইনের ভারসাম্য বজায় রেখেই এই পদক্ষেপ কার্যকর করতে হবে। দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও পশুদের সুরক্ষাদু’টিকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে।

Related posts

Leave a Comment