বৃষ্টি ভেজা বিকেলে শারদ উৎসবের সূচনা মুখ্যমন্ত্রীর, কটাক্ষ বিরোধী দলনেতার!

Spread the love

দুবেলা, রিয়া বিশ্বাস: রাত পোহালেই মহালয়া। আর মহালয়া মানেই ভোর হতেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় চন্ডীপাঠ শোনা, মহিষাসুরমর্দিনী শুনে বাঙালির মহালয়ার দিন শুরু। আর ঠিক মহালয়ার আগের দিন শনিবার বিকেলে শহরজুড়ে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তবুও উৎসবের আমেজে ভিজল কলকাতা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃষ্টি মাথায় করে একসঙ্গে তিনটি শারদ উৎসবের উদ্বোধন করলেন। জনসমাগম, আলো ঝলমলে প্যান্ডেল আর ঢাকের তালে তালে উৎসবের রঙ যেন আরও বহুগুণ বেড়ে উঠল। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি ঘিরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথমে হাতিবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব, তারপর ডালাপ্রত্যয় আর সবশেষে শ্রীভূমির পুজোর সূচনা করেন।

 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুজো শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক। একসাথে সবাই মিলে উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নেব, এটাই বাঙালির আসল শক্তি।” তিনি উপস্থিত সাধারণ মানুষকে আগাম শুভেচ্ছা জানান। এবং যে যার মাতৃভাষাকে সম্মানের কথা বলেন।

তবে রাজনৈতিক মঞ্চে এই দিনটিও কটাক্ষ থেকে বাঁচল না। বিরোধী দলনেতা এদিনই সমালোচনার সুরে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী উৎসবের আলোয় আড়াল করতে চাইছেন অন্ধকার বাস্তবকে। মানুষ প্রতিদিন সমস্যার মধ্যে দিন কাটাচ্ছ চাকরি নেই, দুর্নীতি চলছে, আইনশৃঙ্খলা প্রশ্নের মুখে। এছাড়াও পুজো শুরুর এত আগে থেকেই শারদ উৎসবের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী, এমন কি বৃষ্টি মাথায় কাপড় কানে গুঁজে। যেন আলাদা বার্তা দিতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনও জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে বিরোধী দলনেতার মধ্যে।

শাসকদলের পাল্টা বক্তব্যও আসে সঙ্গে সঙ্গে। তৃণমূল নেতাদের মতে, “মুখ্যমন্ত্রী সবসময় মানুষের পাশে থেকেছেন। পুজো মঞ্চে তাঁর উপস্থিতি বাংলার সংস্কৃতিকে সম্মান জানানো। বিরোধীরা উন্নয়নের বিষয় নিয়ে কিছু বলতে পারে না, তাই সমালোচনা ছাড়া ওদের কাজ নেই।”

বৃষ্টি সত্ত্বেও এদিন তিনটি ক্লাবেই মানুষের ভিড় ছিল উল্লেখযোগ্য। উৎসবপ্রেমীরা জানান, “মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসে উদ্বোধন করলেন, এটা আমাদের গর্বের বিষয়। রাজনীতি যাই হোক, পুজো তো আনন্দের উৎসব।” তবে রাজনৈতিক কটাক্ষে রাজ্যজুড়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, পুজোকে ঘিরে রাজনীতির কৌশল বহুদিনের পুরনো। শাসকদল উৎসবের মঞ্চকে ব্যবহার করে জনসংযোগ বাড়াতে চাইছে, আর বিরোধীরা সেটাকেই সমালোচনার হাতিয়ার করছে।

দিনের শেষে বলা যায়, একদিকে বৃষ্টি ভেজা বিকেলে আলো, রঙ আর ঢাকের তালে শুরু হল শারদ উৎসবের পথচলা। অন্যদিকে রাজনৈতিক তরজায় জমে উঠল তর্ক-বিতর্ক। তবুও বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো মানে আনন্দ, মিলন আর ঐক্যের বার্তা। তাই রাজনীতির কোলাহল পেরিয়ে উৎসবের আবহে মেতে উঠল শহর, বৃষ্টির ফোঁটা যেন সঙ্গী হল সেই আনন্দের স্রোতে।

Related posts

Leave a Comment