নতুন রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে মিজোরামের অর্থনীতি চাঙ্গা করার চেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর

Spread the love

দুবেলা, স্বর্ণেন্দু হালদারঃ নরেন্দ্র মোদি শনিবার আসামের শিলচর থেকে বৈরাবি পর্যন্ত বিস্তৃত রেলপথের উদ্বোধন করেন। সবুজ বন, গভীর গিরিখাত এবং খাড়া ঢালের মধ্যে দিয়ে এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলাচল করে। এরকম ঝুঁকিপূর্ণ ভূখণ্ডে ৫১.৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেললাইন নির্মাণের সময় যে চ্যালেঞ্জ গুলির মুখোমুখি হত উত্তর-পূর্ব রেলওয়ে তা অবাক করারই মতো। এখনো পর্যন্ত বৈরাবি থেকে আইজল পর্যন্ত সড়কপথে ভ্রমণ করতে প্রায় ছয় থেকে সাত ঘন্টা সময় লাগত। সেখানে নতুন রেলপথের মাধ্যমে সময় লাগবে মাত্র দু’ঘণ্টা।

নতুন লাইনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আইজল-দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস, আইজল-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস এবং আইজল-কলকাতা এক্সপ্রেস টেনের উদ্বোধন করেন। ১৩ই সেপ্টেম্বর থেকে আইজল থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত নিয়মিত যাত্রী পরিষেবা শুরু হয়। আইজল থেকে কলকাতা এবং আইজল থেকে দিল্লি পর্যন্ত যাত্রী পরিষেবা যথাক্রমে ১৮ সেপ্টেম্বর এবং ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে।

এন এফ আর -এর জনসংযোগ কর্মকর্তা নীলাঞ্জনা দেব বলেন, “মিজোরাম একটি স্থল বেষ্টিত রাজ্য। এখন পর্যন্ত মানুষ বিমান এবং সড়কপথে ভ্রমণের উপর নির্ভরশীল ছিল, যা ব্যয়বহুল। এখন মানুষের কাছে আর একটি বিকল্প আছে যা সাশ্রয় এবং নির্ভরযোগ্য। তিনি জানান, এই নতুন লাইনটি চালু হওয়ার ফলে দিল্লি, গুয়াহাটি এবং কলকাতার সাথে জনসংযোগ স্থাপনের ফলে মিজোরামের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।

রেললাইন প্রকল্পে কাজ করা রেলওয়ে প্রকৌশলীরা বলেছেন, এটি তাদের জন্য সবচেয়ে কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতাগুলির মধ্যে একটি ছিল। নভেম্বর থেকে মার্চ, পাঁচ মাসের সংক্ষিপ্ত সময়ে বাইরে থেকে সবকিছু সংগ্রহ করে প্রকল্প স্থলে পরিবহন করা, এটি শুরু থেকেই ক্লান্তিকর ছিল। প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী বিনোদ কুমার বলেন, যে কাঁচামাল বালি, কাঠের টুকরো এবং পাথর স্থাপন করা হয় তা আসাম, পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খন্ড থেকে আসত। তিনি আরও বলেন, কোন স্থায়ী শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। আমাদের বাইরে থেকে লোক আনতে হয়েছিল।

লামডিং বিভাগের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক সামির লোহানী ব্যাখ্যা করেন, রেলপথের প্রায় ২৩ শতাংশ সেতুর মধ্য দিয়ে যায়। যার মধ্যে ৫৫টি প্রধান এবং ৮৮ টি ছোট সেতু রয়েছে। এছাড়া ৩০ শতাংশ টানেলের মধ্যে দিয়ে, ৪৫ টি টানেল রয়েছে। লাইনটিতে সাইরাংয়ের কাছে কুরুং নদীর উপর নির্মিত সবচেয়ে উঁচু পিয়ার ব্রিজগুলির মধ্যে একটি রয়েছে। যার উচ্চতা মাটি থেকে প্রায় ১১৪ মিটার উঁচুতে। প্রকল্পটি ২০০৮ সালে অনুমোদিত হয়। তবে এটির কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। প্রকল্পটি যখন অনুমোদিত হয় তখন এর আনুমানিক ব্যয় ছিল ৬১৯ কোটি টাকা কিন্তু যখন এটি সম্পন্ন হয় তখন ব্যয় বেড়ে ৮০৭১ কোটি টাকায় পৌঁছায়।

Related posts

Leave a Comment