BJP নেতা রাকেশ সিং অবশেষে গ্রেপ্তার

Spread the love

দুবেলা, রিয়া বিশ্বাস: অবশেষে পাঁচ দিন ধরে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী নাটকীয় পরিস্থিতির পর গ্রেপ্তার হলেন টেংরায় বহুতলে লুকিয়ে থাকা বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। পুলিশের দীর্ঘ তদন্ত ও নজরদারির শেষে মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁর ট্যাংড়ায় বহুতলের ফ্ল্যাট থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোড়ন।

রাকেশ সিংয়ের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে থেকেই তিনি আইনের চোখে ‘ওয়ান্টেড’ ছিলেন। অভিযোগ, আর্থিক অনিয়ম থেকে শুরু করে ভীতি প্রদর্শন—বহু অভিযোগ জমা পড়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনি বহু টালবাহানায় জড়িত ছিলেন। এমনকি শেষ পাঁচ দিন তিনি কার্যত আত্মগোপন করে ছিলেন।এমনকি নিজের পার্সোনাল ফোন অফ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের বিশেষ টিম রাখেশের মেয়ের লাইভ করা থেকে খবর পেয়ে ট্রাক করে টেংরায়। তারপর একটি নির্দিষ্ট এলাকায় অভিযান চালায় এবং অবশেষে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

রাকেশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাবও কম ছিল না। অভিযোগ, এই প্রভাবকেই কাজে লাগিয়ে এলাকায় একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালাতেন তিনি। তবে গ্রেপ্তারের খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র দোষারোপের পালা। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি নেতাদের মধ্যে দুর্নীতির চিত্র ফের সামনে এল। তাঁদের বক্তব্য, বিজেপি ‘স্বচ্ছ রাজনীতি’র কথা বললেও বাস্তবে তাদের নেতাদের আচরণ বারবার বিতর্ক তৈরি করছে। অন্যদিকে বিজেপি শিবিরের অভিযোগ, রাজ্যের পুলিশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে রাকেশের ছেলেকে অবদি আগে গ্রেপ্তার করেছে।

তবে পুলিশের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, একাধিক নথিপত্র ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই এই গ্রেপ্তার। টেংরা থানার এক আধিকারিক বলেন, “রাকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো রয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুতর। আইন অনুযায়ী তদন্ত চলছে। প্রমাণের ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে তাঁকে হাজির করা হবে।” এই গ্রেপ্তারের পর টেংরার রাজনীতি আরও গরম হয়ে উঠেছে। এলাকায় টহলদারি বাড়ানো হয়েছে যাতে কোনওরকম অশান্তি না ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গ্রেপ্তার শুধু একজন নেতার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নয়, বরং আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় বার্তাও বয়ে আনল। বহু দল পালটে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাদের মধ্যে ভাঙন বা বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ চাইছেন আইনি প্রক্রিয়ায় দ্রুত পদক্ষেপ হোক। তাঁদের বক্তব্য, “দোষী হলে অবশ্যই, শাস্তি পাওয়া উচিত। রাজনীতি নয়, ন্যায়বিচারটাই হোক মুখ্য।”

Related posts

Leave a Comment