দুবেলা, বিজয় হালদারঃ শনিবার কল্যানী স্টেডিয়ামে মরশুমের প্রথম কলকাতা ডার্বিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ৩-২ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করে ইস্টবেঙ্গল টেবিলের পাঁচ নম্বর স্থানে অবস্থান করছে। প্রথমার্ধে দু-গোলে পিছিয়ে পড়েও, দ্বিতীয়ার্ধে দু-গোলের সমতা ফিরলেও শেষ রক্ষা হলো না সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের, ফলে জয়ের দেখা মিলল না তাদের। খেলার শুরু থেকেই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী একে অপরকে মেপে নেওয়ার কৌশল নিয়ে নেমেছিল।
প্রথম দিক থেকে নজর কেড়েছিল কিয়ান নার্সারী, তবে খেলার মোড় ঘুরিয়ে ৯ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। এডমুন্ড এবং সায়নের সুন্দর বোঝাপড়া থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে জালে জড়িয়ে দেন ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক জেসিন টিকে। ধীরে ধীরে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে এবং মোহনবাগান নিজেদের ছন্দ কিছুটা হারিয়ে ফেলে। এর মাঝেই উত্তেজনার চরম পর্যায় নিয়ে যায় দুই দলের ধাক্কাধাক্কি। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে ইস্টবেঙ্গলের সায়ান বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি অসাধারণ গোলের মাধ্যমে ব্যবধান ২-০ করেন।
Kolkata Derby: 1921 থেকে 2025, ইতিহাসের পাতায় দেখে নিন বাঙালির আবেগের বড় ম্যাচ
সমর্থকদের উল্লাসের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। মোহনবাগানের কর্নার থেকে বল ক্লিয়ার হয়ে দ্রুত আক্রমণের সৃষ্টি করেন এডমুন্ড, সেখান থেকে পাস দেন ফাঁকায় থাকা সায়নকে এবং সেখান থেকে বাগান গোলরক্ষককে কাটিয়ে অনায়াসে বল জালে পাঠিয়ে দেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সম্পূর্ণ অন্য মোহনবাগানকে লক্ষ্য করা যায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বাগান দল। ৫৫ মিনিটে গোল করেন লিয়ন কাস্টানহা। কর্নার থেকে ভাসানো বল নামিয়ে দেন দীপেন্দু, সেখান থেকে লাল হলুদের গোলরক্ষক দেবজিতের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে ২-১ গোলের সমতায় ফেরান কাস্টানহা। গোল পেয়ে নিজেদের মনোবল ফিরে পান এবং আক্রমণ আরও বাড়িয়ে দেয় সবুজ-মেরুন ব্রিগেড।
সেই সময় খেলা থেকে প্রায় হারিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। এবং ৬৭ মিনিটে সমতায় ফেরে মোহনবাগান। ডান দিক থেকে আবারও ভাসানো বল থেকে হেডে গোল করেন কিয়ান নার্সারী। কিন্তু চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই এক মোক্ষম জবাব দিলো ইলিশ তথা ইস্টবেঙ্গল। কিয়ানের গোল করার ঠিক দুমিনিটের মাথায় ডান দিক থেকে আমান সিকে বল ভাসিয়ে দেন বক্সের মধ্যে গোল করার উদ্দেশ্যে, এবং সেখান থেকে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা ডেভিড কোনো ভুল করেননি। সময় নিয়ে হেড করে বল তিন কাঠির মধ্যে রাখেন এবং ইস্টবেঙ্গলকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন।
গোল করে আবেগ ধরে না রাখতে পেরে জার্সি খুলে উল্লাস করায় ডেভিডকে রেফারী হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন। ম্যাচের শেষ দিকে মোহনবাগান বেশ কিছু সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি। কিন্তু অপরদিকে ৮৩ মিনিটে ডেভিড আরও একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন , যা ডিভিডের মতন প্লেয়ারের কাছ থেকে অবিশ্বাস্য ছিল। শেষ মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গলের আমান সিকে লাল কার্ড দেখলেও জয় আটকাতে অধরায় থেকে যায় সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। এই জয় ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উল্লাস এবং তাদের মুখের হাসি দ্বিগুণ ফুটিয়ে তুলেছে।

প্রতিমুহূর্তের খবর পেতে লাইক করুণ II দুবেলা নিউজ