দুবেলা, রিয়া বিশ্বাস: বর্তমানে মোবাইল ছাড়া এক মুহূর্তও চলা দায়। স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে শুরু করে অফিসফেরত যুবক প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় কাটছে স্মার্টফোনের স্ক্রিনে। বিভিন্ন সময় ওয়েটিং রুমে গেলে দেখা যায় যদি সেখানে ১০০ জন বসে থাকে, তারমধ্যে ৮০ জন ফোন এর দিকে ঘাড় নিচু করে তাকিয়ে আছে।কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায়, কেউ বা ইউটিউব-রিলসের জগতে। কিন্তু এর ফলাফল মারাত্মক ১৫ থেকে ৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘাড় ঝুঁকিয়ে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহার থেকে শুরু হচ্ছে টেক্সট নেক সিনড্রোম, হাতের জয়েন্টে ব্যথা, এমনকি মেরুদণ্ডে চাপ।
চিকিৎসকদের মতে, ঘাড় ১৫ ডিগ্রি নিচে ঝুঁকলে মেরুদণ্ডে প্রায় ১২ কেজি ওজনের চাপ পড়ে। ৩০ ডিগ্রি হলে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৮ কেজি। দীর্ঘ সময় এমন ভঙ্গিতে থাকার ফলে মাথা, ঘাড় ও পিঠে ক্রমাগত যন্ত্রণা, পেশি টান, এমনকি ডিস্ক স্লিপের সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। বেলেঘাটা ID হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অরিন্দম চক্রবর্তীর কথায়, “বয়স মাত্র ১৫-২০ অথচ ঘাড়ে ৪০-৫০ বছরের রোগের লক্ষণ! দিনে কয়েক ঘণ্টা ফোন স্ক্রল করলেই শরীরের উপর প্রভাব পড়ে।” চিন্তায় অভিভাবকেরাও।স্কুল থেকে ফিরেই বাচ্চারা ফোনে ডুবে যায়। না বললে রেগে যায়। এখন ঘাড়ে ব্যথা, হলে ফিজিওথেরাপির দরকার পড়ছে। শুধুঘাড়ের ব্যাথা নয় শরীরের যেকোনো জায়গায় ব্যাথা দেখা দিলে আগেই লাগছে ফিজিওথেরাপি।
সমাধান চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন মোবাইল চোখের সমান্তরালে ধরে ব্যবহার করুন। একটানা ২০ মিনিটের বেশি ফোন না দেখার চেষ্টা করুন।দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং করুন।শিশুদের ক্ষেত্রে অভিভাবকরা নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করুন। একবিংশ শতকের প্রযুক্তি যেমন সুবিধা এনেছে, তেমনই আনছে শারীরিক ঝুঁকি। নতুন প্রজন্মের হাতে মোবাইল, কিন্তু তার বিনিময়ে যেন না চলে যায় সুস্থ শরীর ও শান্ত মন।
এখন প্রায় মানুষদের দেখা যায় কোমরে যন্ত্রনা আবার হাঁটুর ব্যাথায় কাতর। সেখানে এখন নতুন প্রজন্মের মধ্যে ঘারে যন্ত্রনা দেখা দিচ্ছে। সতর্ক না থাকলে আরও বড়ো বিপদের মুখে পড়তে হতে পারে সকলকে। আপনার সন্তানের ‘নেক পেন’ হয় কি?তাহলে শুধুই কি পড়াশোনা এবং ক্লাসের চাপ, না কি ফোনের ফাঁদে পড়েছে, খেয়াল রাখুন আজই।

প্রতিমুহূর্তের খবর পেতে লাইক করুণ II দুবেলা নিউজ